রবীচন্দ্রন অশ্বিনের বোলিং নৈপুণ্যে চেন্নাই টেস্টে ভারতের কাছে ২৮০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে সফরকারী বাংলাদেশ।
হার অবশ্যম্ভাবী ছিল-ই। অশ্বিন জাদেজার ঘূর্ণিতে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে হারতে হল বাংলাদেশকে। ৫১৫ রানের বিশাল লক্ষ্যের সামনে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ খতম হয়ে গেল মাত্র ২৩৪ রানে। অশ্বিন প্রথম ইনিংসে শতরানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট তুলে নিলেন। জাদেজার সংগ্রহ ৩ উইকেট। চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশকে ২৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল।
আরও পড়ুন –
- চিনকে কড়া বার্তা মোদীর, ভারতের থেকে US-র শেখা উচিত : বাইডেন, বাইডেনের বাড়িতে মোদী।
- বাংলাদেশের অশান্তির ঘটনার প্রতিবাদে আগরতলা রাজপথে নামলো তিপরা মথা ও চাকমা ছাত্র সংগঠন।
তিন দিনের জায়গায় ম্যাচ চতুর্থ দিন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়াতেই স্বান্ত্বনা পেতে পারে বাংলাদেশ।রোহিত শর্মার ফলো অন না করানোর সিদ্ধান্ত, প্ৰথম দিন বাংলাদেশের স্লো ওভার রেট এবং তৃতীয় দিন খারাপ আলোর কারণে ৭-৮ ওভার কম খেলা হওয়ায় ম্যাচ শেষমেষ গড়িয়েছিল চতুর্থদিনে। আর রবিবার ফার্স্ট সেশনেই বাংলাদেশ বাকি ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলল। ভারত সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
শনিবার বাংলাদেশ মাঠ ছেড়েছিল হাতে ছয় উইকেট নিয়ে। সাকিব এবং অধিনায়ক শান্ত ক্রিজে টিকে ছিলেন। দুজনে মিলে রবিবার বুমরা-সিরাজের ওপেনিং স্পেল কোনওরকমে সামলে দেন। প্ৰথম ঘন্টায় একটাও উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। তবে যখন মনে হচ্ছিল শান্ত-সাকিবের জুটি ভারতকে বেগ দিতে চলেছে সেই সময়েই অশ্বিন এসে দুজনের জুটিতে ভাঙন ধরান।
আক্রমণে এসে অশ্বিন প্ৰথম ওভারেই ৫০ রানের জুটিতে ভাঙন ধরিয়ে সাকিবকে আউট করার পর যেন ফ্লাডগেট খুলে যায়। এরপরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার। বাংলাদেশ শেষ ৬ উইকেট হারায় মাত্র ৪০ রান যোগ করার ফাঁকে।
প্ৰথম দুই দিন পিচে পেসারদের জন্য রসদ ছিল। তৃতীয় দিন থেকেই পিচ অনেকটাই ব্যাটিং সহায়ক হয়ে উঠেছে। পিচে অল্প বিস্তর টার্ন এবং অসমান বাউন্স রয়েছে। এমন পিচে একটু ধৈর্য্য ধরে খেলতে পারলেই বড় রানের দেখা মিলবে। শুভমান গিল, ঋষভ পন্থের সেঞ্চুরিই যে বিষয়ের সাক্ষ্য দিয়ে যায়। এমন ব্যাটিং পিচেই দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের পাহাড় প্রমাণ রানের চাপে মাথা নুইয়ে ফেলল বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনে শুরুটা খারাপ করেনি টাইগার শিবির। জাকির হোসেন এবং সাদমান ইসলাম মিলে ওয়ানডের মেজাজে ৬২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ভারতকে হালকা হলেও চাপে রেখেছিলেন। তবে বুমরা নিজের দ্বিতীয় স্পেলে জাকিরকে ফেরানোর পরেই বাংলাদেশ নুইয়ে যায়।
প্ৰথম ইনিংসে ভারত জাদেজা এবং অশ্বিনের রেকর্ড পার্টনারশিপে ভর করে ৩৭৬ তুলেছিল। ভারত একসময় ১৩৪/৬ হয়ে গিয়ে অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। তবে অশ্বিন-জাদেজার ১৯৯ রানের পার্টনারশিপই ম্যাচের নির্ণায়ক হয়ে উঠল। অল্প বিস্তর পেস সহায়ক পিচে বাংলাদেশ যে সিরাজ-বুমরা-আকাশ দীপের সামনে দাঁড়াতে পারবে না, তা প্রত্যাশিত-ই ছিল।
সেটাই ঘটেছে। তিন পেসারের পেসে চোখে সর্ষেফুল দেখেছিল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। বুমরা অল্পের জন্য ফাইফার পাননি। ফলো অনের সুযোগ থাকলেও ভারত দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নেমেছিল আগামী টানা টেস্ট সিজনের আগে ব্যাটারদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। তাছাড়া চেন্নাইয়ের তীব্র গরমে বোলারদের রেস্ট দেওয়ার বিষয়টিও ছিল- দুই লক্ষ্যেই ভারত সফল।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ভারত রোহিত-কোহলি-যশস্বীকে হারালেও বাংলাদেশ কখনই ম্যাচে ছিল না। বিশাল লিডের পাহাড় চাপিয়ে গিল-পন্থের সেঞ্চুরির পরেই নির্ধারক হয়ে যায় ভারতের ম্যাচ জেতার বিষয়টি।