চাইলে চারদিনের মধ্যে কলকাতা, অসম, ত্রিপুরা ছিনিয়ে নিতে পারি’, বলে ক’দিন আগে হুমকি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার। এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কলকাতা, কোচবিহার, অসম, ত্রিপুরার ম্যাপ দিয়ে ‘বৃহৎ বাংলা’-র দাবি তুলেছেন।
যদিও তাঁর সরকারি পরিচয়ের কারণে বাংলাদেশ প্রশাসনের উপর মহলের পরামর্শে পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছেন। তার আগেই সেটির স্ক্রিনশট সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে ঘণ্টা দুই থাকা পোস্টটিকে সমর্থন এবং বিরোধিতা করে বহু মানুষ মন্তব্য করেন। অনেকে শেয়ার করেছেন। পোস্টটিতে তিনি ১৯৭৫-এ দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার ঘটনাকে একপ্রকার দেশের কল্যাণে ‘বিশেষ সুযোগ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বছর তিরিশের তরুণ মাহফুজ আলম প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের বিশেষ সহকারী। তিনি মূলত প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক বিষয়গুলি দেখে থাকেন। গত মাসে ইউনুস তাঁকে উপদেষ্টা করে নিয়েছেন।
যদিও তাঁকে কোনও মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। উপদেষ্টা হিসাবেই তিনি ইউনুসের সহকারীর ভূমিকা পালন করে থাকেন। তাঁর বিশেষ আস্থাভাজন মাহফুজকে বিশ্ববাসীর সামনে গণ অভ্যত্থানের কারিগর বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন ইউনুস। স্বভাবতই মাহফুজের পোস্টটি নিয়ে সরকারের মধ্যে অস্তস্তি রয়েছে। যদিও পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়ায় ভারত সরকার বা ঢাকার ভারতের হাই কমিশন তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
সোমবার ছিল বাংলাদেশের বিজয় দিবস। সোমবার বেশি রাতে ফেসবুক পোস্টে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে মাহফুজ লেখেন, ‘বিজয় এসেছে, তবে সামগ্রিক নয় মুক্তি এখনও বহুত দূরে।’ এরপর লিখেছেন, ‘হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত জনপদ পুনরুদ্ধার ব্যতিত পোকায় খাওয়া পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ দিয়ে আমরা মুক্তিকে ছুঁতে পারব না।’
দীর্ঘ লেখার শেষে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দুই দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, অসম, ত্রিপুরার ম্যাপ সংযুক্ত করেন। ম্যাপের নীচে লিখেছেন, ‘বি: দ্র: এ ছবিটা ভাসানী (আওয়ামী লিগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল হামিদ খান ভাসানী), আবুল হাশিম, যোগেন মণ্ডল, সোহরাওয়ার্দীসহ সব জাতীয় নেতাই পাকিস্তান আন্দোলনে বিতরণ করেছেন। তাজউদ্দীন ও শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশ শুরুর বিন্দু, অন্তবিন্দু নয়। ’৪৭ হয়ে ৭১ থেকে ২৪ এ শেষ নয়, ইতিহাস এখনও অপেক্ষমান। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!’