ভারতকে ‘অস্থিতিশীল করার’ চেষ্টায় আছে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট, দাবি বিজেপির

আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভারতকে ‘অস্থিতিশীল করার’ চেষ্টায় আছে বলে অভিযোগ করল বিজেপি। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একের পর এক পোস্ট করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, গত ৪ বছরে কংগ্রেস যে সব ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছে, সেই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক প্রচারের ওপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, পেগাসাস, আদানি থেকে শুরু করে জাতিগত জগণনা, হাঙ্গার ইন্ডেক্স, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা – এই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক মহল থেকে সমর্থন পেয়েছে কংগ্রেস। 

সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিজেপি লিখেছে, ‘যখনই কোনও রিসার্চ রিপোর্ট সামনে এসেছে বা বিদেশি কোনও সংস্থার তরফ থেকে কোনও সূচক প্রকাশিত হয়েছে, কংগ্রেস সেই সব ইস্যুকেই হাতিয়ার করে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে। এটার জেরে প্রশ্ন তো উঠবেই। মনে হচ্ছে, কংগ্রেস যেন পশ্চিমী বিশ্বে সঙ্গী লুকিয়ে রেখেছে। সেখান থেকেই একটি ন্যারেটিভ তৈরি করে ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এখন সময় এসেছে এই এজেন্ডাকে প্রকাশ করা।’ এরপরে বিজেপির তরফ থেকে আরও লেখা হয়েছে, ‘২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর ফিন্যানশিয়াল টাইমস একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে – মোদীর রকফেলার: গৌতম আদানি এবং ভারতের কুক্ষিগ শক্তি। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিজেপিকে দুর্বল করতে আদানিকে আক্রমণ শানাতে হবে। হিসেব করেই এই ন্যারেটিভ প্রচার করা হয়েছিল ভারত এবং দেশের নেতৃত্বকে দুর্বল করতে।

এরপর পোস্টে বিজেপি লেখে, ‘২০২৩ সালের ৩১ অগস্ট, জি২০ শীর্ষ সম্মেলের মাত্র ১০ দিন আগে রাহুল গান্ধী একটি প্রেস কনফারেন্স করেন আদানি ইস্যুত। সেখানে তিনি সরাসরি মোদীকে আক্রমণ শানান। রাহুল গান্ধী উদ্দেশ্য স্পষ্ট ছিল। তাঁর আসল লক্ষ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতের শেয়ার বাজার। তাতে আদানি নিছকই একটি হাতিয়ার ছিল। বিগত ৪ বছরে কংগ্রেস ধারবাহিক ভাবে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে আদানি ইস্যুতে। এই সব হমলার জেরে সংসদ অচল হয়েছে। করদাতাদের কোটি কোটি টাকা এতে নষ্ট হয়েছে।’ বিজেপি আরও বলেছে, ‘আরও যে ইস্যুতে কংগ্রেস সংসদ অচল করেছে, সেটা হল পেগাসাস। সেই সময় রাহুল গান্ধী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানিয়েছেন.

বিজেপির দাবি, ‘আদানি এবং পেগাসাস ইস্যুতে একটি সূত্র হল OCCRP। এটি ইউরোপ ভিত্তিক একটি সংবাদসংস্থা। এর থেকেই বোঝা যায়, ভারতের বিরুদ্ধে প্রচারের ক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং OCCRP-র মধ্যে যোগ আছে। ২০২১-২০২২ সালে OCCRP একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে পেগাসাস ইস্যুতে। সংসদ অধিবেশনের আগে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে সেই সব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। কংগ্রেস সেই সব প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করেছিল সংসদ অচল করতে। ২০২৩ সাল থেকে OCCRP আদানি ইস্যুতে ৫ থেকে ৭টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বে এত বহুজাতিক সংস্থা থাকতেও আদানির ওপরই ফোকাস করে থেকেছে তারা। এর আগে পুতিনের বিরুদ্ধে একই কাজ করেছিল তারা। এরপরই গোটা কংগ্রেস আদানি ইস্যুতে নড়েচড়ে বসে এবং OCCRP-র সেই সব প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে আদানি, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ভারতকে আক্রমণ শানিয়েছে। OCCRP ক্রমাগত কংগ্রেসকে নানান ইস্য়ুতে সমর্থন করে গিয়েছে। তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাতেই স্পষ্ট। OCCRP বারবার হাতিয়ার তুলে দিয়েছে কংগ্রেসের হাতে, এবং সেটা ব্যবহার করে তারা বিজেপি এবং ভারতকে আক্রমণ করেছে।