অশান্ত বাংলাদেশ। আক্রমণ নেমে আসছে হিন্দুদের উপর। আতঙ্ক এবং অশান্তির মধ্যে জনজীবন বিপর্যস্ত। এই আববে ব্রিটেন তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ সফরের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে। সুতরাং ওপার বাংলার ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক স্তরে কতটা বাড়ল সেটা এই ঘটনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে। এই বিষয়টি মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের ভাল লাগেনি। ব্রিটিশ সরকার যে নির্দেশিকা দিয়েছে তাতে উল্লেখ রয়েছে, ‘জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশে’।
এরপরই ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুককে ডেকে বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা ভিত্তিহীন। যদিও বাংলাদেশের কারা বিভাগের ডিজি জানান, ৮ অগস্ট ইউনুস সরকার গঠন হওয়ার পরে চার মাসে ১১ জন শীর্ষস্থানীয় দুষ্কৃতী এবং ১৭৪ জন জঙ্গি জামিনে মুক্তি পেয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের জমানায় ইসলামি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়া হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রক্তক্ষয়ী অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের গ্রেফতার করে জেলে ভরেছিল। বাংলাদেশের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা বলেন, ‘এই সরকারের আমলে গণতন্ত্রের বদলে মবোক্রেসি চেপে বসেছে। ক্ষোভের প্রকাশ ঘটলে খুনের মামলা দেওয়া থেকে পিটিয়ে মারা হতে পারে বলে মানুষ বুঝতে পেরেছেন। সকলে এখন আতঙ্কিত। একজন নাগরিক হিসাবে আমিও নিজের নামটুকু প্রকাশ করার ঝুঁকি নিতে পারছি না।’ ব্লগার হত্যার পাণ্ডা আনসারউল্লা বাংলা টিমের টপমোস্ট জঙ্গি জসিমুদ্দিন রাহমানিকে ইউনুস সরকার মুক্তি দিয়েছে।
এই সরকারের জমানায় যে সাংবাদিকরাও নিরাপদ নন তার একাধিক প্রমাণ মিলেছে। সাংবাদিক মারধর থেকে শুরু করে সরকারি পরিচয়পত্র এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ হারানো সবই ঘটেছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসা থেকেই প্রকাশ্যে মিছিল, মিটিং করছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরির বলে অভিযোগ। সরকারের মধ্যেও এই জঙ্গিদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর তারপর থেকেই খুন, রাহাজানি, চুরি–ডাকাতি, ছিনতাই এবং অপহরণের ঘটনা রোজই করছে। পুলিশ সূত্রে খবর, আন্দোলনের সময়ে ছিনতাই করা হয়েছিল ৫৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সাড়ে ৬ লক্ষের বেশি গোলাবারুদ। এখন সেসব জঙ্গিদের হাতে পৌঁছেছে।
এখন বাংলাদেশে ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর হয়ে আদালতে কাউকে সওয়াল করতে দেওয়া হচ্ছে না। যে আইনজীবী সওয়াল করতে যাচ্ছেন তাঁকে মারধর, হুমকি পেতে হচ্ছে। তাই ওই সন্ন্যাসী জামিন পাচ্ছেন না। তার জেরে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। কলকাতার এক আওয়ামি লিগের নেতা বলেন, ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন থেকে জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে লাগাম টানার কোনও কাজই ইউনুস সরকার করছে না। সেটা দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশের আমজনতা। এখন উগ্র ভারত বিরোধিতার পুরনো তাস আবার খেলা শুরু হয়েছে।