দেশজুড়ে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা রুখতে এ বার হস্তক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে একটি খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের জামিনের আর্জির শুনানি চলাকালীন গোটা দেশেই যে ভাবে বেআইনি অস্ত্র ব্যবহার করে অপরাধ চলছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন ও বিচারপতি পঙ্কজ মিথালের ডিভিশন বেঞ্চ। বিষয়টিকে সার্বিক ভাবে দেখতে চেয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। যাতে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানা ও বিভিন্ন রাজ্যে তার অপব্যবহার বন্ধ করা যায়, তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
আগামী ১০ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যভিত্তিক কমিটিগুলিকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।মূল মামলার সূত্রপাত যোগীরাজ্য থেকে হলেও বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রুখতে স্বতঃপ্রণোদিত কেস রুজু করেছে শীর্ষ আদালত। বাংলার দিক থেকে বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আইনজ্ঞ ও প্রশাসনিক মহলের একাংশ। তার কারণ, গত শুক্রবারই খাস কলকাতায় বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়ে খুনের চেষ্টা হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের এক কাউন্সিলারকে। তার আগে শিয়ালদহের সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে থেকে এক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স অনেকগুলি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে।
ধৃতকে জেরা করে বিহারের মুঙ্গেরে একটি বাড়ির মাটির নীচে খাবার প্লেটের কারখানার আড়ালে বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ পান গোয়েন্দারা। পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন বছরে কলকাতা–সহ গোটা রাজ্যে ১৪টি বড় পুলিশি অপারেশনে দু’শোর মতো বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য বিষয়টি শুধুমাত্র উদ্ধার ও গ্রেপ্তারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছে না। শীর্ষ আদালত চাইছে, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের এই রমরমা বন্ধ করতে পুরোদস্তুর ঝাঁপাক রাজ্যগুলি।
বিচারপতি নাগরত্ন ও বিচারপতি মিথালের বেঞ্চ তার নির্দেশে বলেছে, ‘স্থানীয় ভাবে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র তো তৈরি হচ্ছেই, পাশাপাশি অস্ত্র ও গোলাবারুদের স্মাগলিং চলছে। এবং এই অস্ত্রশস্ত্র দেশ তথা সমাজের বিরুদ্ধে অপরাধের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সবচেয়ে বড় চিন্তার। আমরা মনে করছি, অস্ত্র আইনের বিভিন্ন ধারা কার্যকর করার ক্ষেত্রে একটা গা–ছাড়া মনোভাব কাজ করছে।