পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নারকীয় অত্যাচারের প্রতিবাদে “ফোরাম ফর প্রটেকশান অফ মাইনোরিটিজ ইন বাংলাদেশ” -এর উদ্যোগে আগরতলা শহরে মহা মিছিল সংগঠিত হয়। এই মিছিলে অংশ নিলেন কয়েক হাজার মানুষ। বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়ার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদে শামিল হয় বুদ্ধিজীবী অংশের মানুষের সাথে সাধারণ মানুষও। এদিন মিছিলটি আগরতলা প্রেসক্লাবের সামনের দিকে শুরু হয়েছে। মিছিলটি শুরু হওয়ার আগে ভারত এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। তারপর মিছিলটি এগিয়ে যায়।
মিছিলের অগ্রভাগে উপস্থিত ছিলেন “ফোরাম ফর প্রটেকশান অফ মাইনোরিটিজ ইন বাংলাদেশ” -এর সভাপতি সুবল কুমার দে। তিনি বলেন বিশ্বে মানবতা বারে বারে লাঞ্ছিত হয়েছে। বাংলাদেশে সরকার বদলের জন্য একটা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হয়েছে। এবং সরকার বদলের পর যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। এমন নৈরাজ্য পৃথিবীর কোন দেশে কখনো হয়েছে বলে জানা নেই। সার্বিকভাবে বলা যায় এক প্রকার ভাবে জঙ্গলের রাজত্ব তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। আর এই জঙ্গলের রাজত্বের শিকার হয়েছে সংখ্যালঘুরা।
এর বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। কিন্তু তারপরও থামছে না। আর এটা যদি বিপ্লবের চেহারা হয় তাহলে আর কোনদিন পৃথিবীতে বিপ্লব আসবে না বলে বাংলাদেশের অমানবিক ঘটনাগুলি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। তারপর মিছিল শেষে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লুর কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সেই সঙ্গে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে স্মারক লিপি প্রদান করেন তাঁরা। দাবি করা হয় অবিলম্বে যাতে বাংলাদেশের শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়। সংখ্যালঘুরা যাতে সেখানে মাথা তুলে বাঁচতে পারে। মিছিলের অগ্রভাগে সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি বিমান ধর, সম্পাদক পূর্ণেন্দু ক্লান্তি দাস সহ বহু বুদ্ধিজীবী অংশের মানুষ। উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে বাংলাদেশের ঢাকায় ছাত্ররা চাকরির কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন ক্রমেই জোরদার হয়ে উঠে। ফলে অফিস আদালত, দোকানপাট ইত্যাদির উপর আক্রমণ শুরু হয়।
দেশের পুলিশ তা প্রতিরোধ করতে গেলে তাদের উপরও আক্রমণ শুরু হয়। ফলে আন্দোলন আরও তীব্র ও হিংসাত্মক হয়ে উঠে। এই আক্রমণ বহু মানুষ হতাহত হয়। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত পাঁচ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। তখন থেকেই আন্দোলন অভিমুখ পাল্টে যায়। গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করা গেছে, গোটা আন্দোলন আচমকা দেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চলে যায়। তখন থেকেই সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাঙ্গা শুরু হয়।
তাদের উপর আক্রমণ শুরু হয়। কিছু সংখ্যক সংখ্যালঘু সম্প্রদাযে়র মানুষকে হত্যা করা হয়। কিছু মানুষকে ধর্মান্তরিত করা হয়। তার থেকেও বেশি উদ্বেগের বিষয়, এক উল্লেখযোগ্য সংখ্যার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারা তাদের লালসার শিকার হতে হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, এত সব অমানবিক ও পাশবিক নির্যাতনের পরেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সদর্থক প্রতিরোধ দেখা যায় নি।