পশ্চিমবঙ্গ

আরজি কর কাণ্ডে নয়া তথ্য CBI-এর হাতে, চিকিৎসক খুন ১৫ লাখের জন্যে?

SHARE

গবেষণাপত্র জমার ‘অনুমতি’ এবং পাশ করানোর জন্যে ১৫ লাক টাকা চাওয়া হয়েছিল আরজি কর কাণ্ডে খুন চিকিৎসকের কাছ থেকে। এমনই তথ্য নাকি উঠে এসেছে সিবিআই তদন্তে। আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্টে আজ এই নিয়ে লেখা হয়েছে, টাকা না দিলে চিকিৎসককে ‘দেখে নেওয়া হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। এদিকে রিপোর্টে জানা গিয়েছে, খুন হওয়া চিকিৎসক নাকি ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে রাজি হননি। অভিযোগ, তাই গত এক বছর ধরে তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছিল।

রিপোর্ট অনুযায়ী, নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নাকি সেই চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, উপরমহলে তিনি এই ১৫ লাখ টাকা ঘুষের বিষয়ে জানাবেন। এই আবহে নাকি বিষয়টি ‘সামলানোর’ জন্যে বলা হয়েছিল হাসপাতালের কয়েকজনকে। তবে কে কাকে এই নির্দেশ দিয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সিবিআই বলছে, অভিযোগ খুব গুরুতর। তাই আদালতগ্রাহ্য প্রমাণ সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত পদক্ষেপ করা খুব কঠিন। তবে এই ঘটনার পুনর্নিমাণ করতে গিয়ে বারবার গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। 

তবে এর মধ্যেও প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা জারি রেখেছে সিবিআই। আরজি করের বেশ কিছু কর্মী নাকি পরস্পর বিরোধী কথা বলেছেন। তবে অনেকের ফোন থেকেই গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য সামনে এসেছে। এদিকে খুন হওয়া চিকিৎসকের এক বান্ধবীর ফোন থেকেই ১৫ লাখ টাকা দাবি সংক্রান্ত তথ্য মিলেছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।

এর আগে জানা গিয়েছিল, আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের গবেষণার বিষয়টি নাকি অন্য কাউকে দিয়ে দিয়েছিলেন এক ভিজিটিং প্রফেসর। এমনই দাবি করেছেন নিহত চিকিৎসকের মা। এই আবহে সেই গবেষণা হেরফেরের ঘটনার সঙ্গে অপরাধের যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। এই আবহে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।

জানা গিয়েছে, ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে গবেষণা করার কথা ভেবেছিলেন নির্যাতিতা। আরজি করের এথিক্স কমিটিতে সেই গবেষণার বিষয়টি পাশ হয়েছিল। এদিকে সেই সংক্রান্ত কাজ আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছিল। যার জন্যে সংক্ষিপ্ত ভাবে গবেষণার বিষয়বস্তু পাঠানো হয়েছিল। এর ফলে অনুমতিও মিলেছিল।

তবে এই নিয়ে নির্যাতিতার মা অভিযোগ করেন, তরুণী চিকিৎসক নাকি তাঁকে জানিয়েছিলেন যে তাঁর থিসিস পেপারটি অন্য কাউকে  দিয়ে দিয়েছিলেন ভিজিটিং প্রফেসর। সেই সময় নাকি মেয়েকে তিনি বলেছিলেন আরও একটা বানিয়ে নিতে। সেই সময় নাকি নির্যাতিতার মায়ের এই বিষয়ে তেমন কিছু মনে হয়নি। তবে এখন এই নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে।রিপোর্ট অনুযায়ী, গবেষণাপত্রের বিষয়টির সঙ্গে অপরাধের কোনও যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে খুন হওয়া চিকিৎসকের তিনজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছে সিবিআই। তাঁদের মধ্যে এক জন আবার চিকিৎসকের বিশেষ বন্ধু। এদিকে তরুণী চিকিৎসকের এক বন্ধু জানান, দ্বিতীয় বর্ষের মাঝামাঝিতে মৃতার গবেণার কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে তাঁকে বলা হয়েছিল, বিষয়টা অন্য কাউকে দেওয়া হচ্ছে। ওঁকে অন্য একটা বানিয়ে নিতে বলা হয়। 

এই নিয়ে এক চিকিৎসক বন্ধু দাবি করেছিলেন, প্রভাবশালী এক জনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একটি ছেলে নানা কলকাঠি নেড়েছিল বলেই মৃতার গবেষণা নিয়ে হেরফের হয়েছিল। সেই ছেলেই নাকি নানান ভাবে প্রভাব খাটিয়ে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। আর তার প্রতিবাদ করেছিলেন মৃতা চিকিৎসক। এই আবহে সেই ঘটনার জেরেই এই অপরাধ ঘটল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। 


SHARE

This website uses cookies.