উচ্চ শব্দ প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ত্রিপুরা হাইকোর্ট। ২০১৪ সালের রায়কে মান্যতা দিয়ে আসন্ন দুর্গাপূজার আগে আবারো সরকারকে মনে করিয়ে দিল উচ্চ আদালত। এ বিষয় নিয়ে বর্তমান সরকার নড়েচড়ে বসেছে। আদালতে রায়ের ঊর্ধ্বে উঠে কোন ধরনের শব্দ দূষণ করা চলবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা। বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উদ্যোগে আসন্ন দুর্গা পূজার দিন গুলিতে পরিবেশকে দূষণ মুক্ত রাখার লক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর সুকান্ত একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয় এই আলোচনা সভা। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা, পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডাঃ বিশাল কুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী Animesh Debbarma জানান, মানুষ যতদিন থাকবে ততদিন দুর্গা পূজা হবে। ততদিন মূর্তি বিসর্জন দেওয়া চলবে। তাই মূর্তি বিসর্জনের জন্য বড় ধরনের একটি ট্যাঙ্ক তৈরির প্রস্তাব দেন মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা। এইটা করতে পারলে জল দূষণ কমানো সম্ভব হবে। প্লাস্টিকের ব্যবহার রুখতে জেলা শাসক ও আরক্ষা প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের সকলকে দায়িত্ব নিতে হবে। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় যাতে কোন শব্দ দূষণ না হয় তার জন্য প্রত্যেকটি ক্লাবকে দায়িত্ব নিয়ে পূজা করতে হবে বলে জানান মন্ত্রী।
আরো বলেন যেসব ক্লাব দায়িত্ব নিয়ে দূষণমুক্তভাবে পূজা করবে তাদের আর্থিক অনুদান দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে। ডিজে সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি আদালত সমস্ত কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রায় দিয়েছে। আর এটা শুধু আদালতের রায়ের বিষয় নয়, সুনাগরিক মহলেরও দায় দায়িত্ব রয়েছে। এবং কিভাবে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে বিষয় নিয়ে সামাজিকভাবে এবং সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনা চলছে। তবে সরকারিভাবে কাউকে গান বাজনা, নৃত্য এবং আনন্দ না করার জন্য বলা হয়নি। কিন্তু সাধারণ মানুষের যাতে কোনরকম সমস্যা না হয় এবং বিশেষ করে শব্দ দূষণ না হয় সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আরো বলেন, ডিজে সিস্টেম বন্ধ করার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি এখন পর্যন্ত। কারণ এর বিরোধিতা করে না সরকার। তারপরও নির্ধারিত ডেসিবেলের মধ্যে শব্দ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ক্লাব কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল এ বিষয়টা তাদের হাতে নেওয়ার। কিন্তু এটা তাদের বিষয় নয়। বিষয়টি পুলিশের হাতে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে শব্দ দূষণ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে পারবে পুলিশ। উল্লেখ্য ২০১৪ সালে সাউন্ড সিস্টেমের উপর শব্দের সীমা নির্ধারণ করেছিল উচ্চ আদালত। এবং উচ্চ আদালতের এই নির্দেশ বাধ্যতামূলক ছিল।
৬৫ ডেসিমেল সীমা অতিক্রমকারী শব্দ নিষিদ্ধ ছিল। পাশাপাশি সেই রায়ে বলা হয়েছিল বছরের ১৫ টি নির্দিষ্ট দিনে দু’ঘণ্টা বাড়ানোর অনুমতি দিয়ে রাত দশটা থেকে সকাল ১২ টা পর্যন্ত উচ্চস্বরে সংগীত ব্যবহারকে সীমাবদ্ধ করেছিল। তারপর কেউ আইন লঙ্ঘন করলে মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করার জন্য ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। বুধবার উচ্চ শব্দ প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ত্রিপুরা হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়কে মান্যতা দেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।