দেশ ও রাজ্যের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির অন্যতম ক্ষেত্র হচ্ছে পর্যটন শিল্প: মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা

দেশ ও রাজ্যের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির অন্যতম ক্ষেত্র হচ্ছে পর্যটন শিল্প। রাজ্য সরকার পর্যটনের বিকাশে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। ফলে রাজ্যে দেশ-বিদেশের পর্যটকের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ইউনাইটেড ন্যাশনস ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন ১৯৮০ সাল থেকে সারা দেশে ২৭ সেপ্টেম্বর দিনটি বিশ্ব পর্যটন দিবস হিসাবে পালনের সূচনা করে। তারপর থেকে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্ধারিত ভাবনার উপর ভিত্তি করে ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হচ্ছে।

২০২৪ সালের পর্যটন দিবসের মূল ভাবনা হল ‘পর্যটন এবং শান্তি’। এই বছর বিশ্ব পর্যটন দিবসের আয়োজক দেশ জর্জিয়া। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটনের অন্যতম সম্পদ। এছাড়াও রয়েছে ধর্মীয় পর্যটনের বিভিন্ন মন্দির ও মসজিদ। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির, কসবা কালিবাড়ি, চতুর্দশ দেবতা বাড়ি, অমরপুরের মঙ্গলচন্ডী মন্দির, মহামুনী প্যাগোডা ইত্যাদি রাজ্যের উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় পর্যটনকেন্দ্র।


অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, রাজ্যের পর্যটন শিল্পের বিকাশে উদয়পুরের মাতাবাড়িকে নবকলেবরে সাজানোর উদ্যোগ চলছে। নারকেলকুঞ্জ এবং ডম্বুরকে ইতিমধ্যেই পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করা হয়েছে। সেখানে লগ হাট চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে। পর্যটন কর্মসংস্থানের অন্যতম বৃহৎ মাধ্যম এবং সমাজের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও দারিদ্র বিমোচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ৪১টি আধুনিক লগ হাট নির্মাণ ও চালু করা হয়েছে। উজ্জয়ন্ত প্রাসাদে লাইট এন্ড সাউন্ড শো চালু করা হয়েছে। নারকেল কুঞ্জে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে। ডম্বুর জলাশয়ে ওয়াটার স্কুটার/জেট স্কী, ভাসমান জেটি, আধুনিক মোটর চালিত বোট চালু করা হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বদেশ দর্শন-১.০ প্রকল্পের মাধ্যমে আগরতলা, সিপাহীজলা, মেলাঘর, উদয়পুর, অমরপুর, মন্দিরঘাট, তীর্থমুখ, নারকেলকুঞ্জ, ডম্বুর, আমবাসা, নীরমহল এবং বড়মুড়া ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরকে একটি আধ্যাত্বিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক কর্তৃক ‘প্রসাদ’ প্রকল্পের মাধ্যমে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির চত্ত্বরের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কমলপুর মহকুমায় সুরমাছড়া ওয়াটার ফলস পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে। রাজ্যের পর্যটন পরিকাঠামো বিকাশের লক্ষ্যে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ছবিমুড়া, কৈলাসহরের সোনামুখী এলাকা, চতুর্দশ দেবতা মন্দির এবং কসবা কালি মন্দির চত্ত্বরের পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছবিমুড়া এবং কৈলাসহরে সোনামুখী এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। এই পর্যটনকেন্দ্রগুলির উন্নয়নের জন্য প্রায় ১৮০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।