আরজি করের ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। এই আবহে আবাস যোজনা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আবাস যোজনার কয়েক হাজার কোটি টাকা আটকে রাখার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তাই রাজ্য সরকার আগেই জানিয়েছিল, রাজ্যের কোষাগার থেকেই আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ করবে সরকার। সেই ঘোষণা মতোই এ বছরের মধ্যেই আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সব মিলিয়ে ১১ লক্ষ পরিবারকে ডিসেম্বর থেকে আবাস যোজনার টাকা দেওয়া শুরু হবে। বুধবার নবান্নে মুখ্য সচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বে সব দফতরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কারা টাকা পাবেন এবং কারা পাবেন না তা নিয়ে পুজোর আগেই তালিকা খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সমীক্ষা শুরু করবে রাজ্য সরকার। কীভাবে সমীক্ষা চালানো হবে তার গাইডলাইনও চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। মূলত যাদের নাম আবাসের তালিকায় রয়েছে তারা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য কিনা সেইসব কিছু খতিয়ে দেখার জন্যই এই সমীক্ষা করা হবে। এরপর চূড়ান্ত তালিকা নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। দুদফায় আবাসের জন্য টাকা দেওয়া হবে। তার মধ্যে প্রথম কিস্তিতে টাকা দেওয়া শুরু হবে ডিসেম্বরে।
প্রাথমিকভাবে কারা আবাস যোজনা টাকা পাবেন তা নিয়ে একটি গাইডলাইন বুধবার প্রকাশ হয়েছে। সেই গাইড লাইন অনুযায়ী, যাদের তিন চাকার বা চার চাকার গাড়ি রয়েছে, তিন বা চার চাকার কৃষি যন্ত্র রয়েছে তারা এই আবাস যোজনা টাকা পাবেন না। এছাড়াও, মাসিক আয় ১৫ হাজারের বেশি হলে এবং ইনকাম ট্যাক্সের অধীনে পরিবারগুলি এই প্রকল্পের টাকা পাবেন না। তাছাড়া যাদের আড়াই একর বা তার বেশি কৃষি জমি আছে এবং ৫ একর অকৃষিজ জমি রয়েছে তারাও এই প্রকল্পের টাকা পাবেন না বলে গাইডলাইনে বলা হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে টাকা দেওয়ার জন্য আগামী ২১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করা হবে। এরপর ১৪ নভেম্বরের মধ্যে পুনরায় সেগুলি খতিয়ে দেখার কাজ শেষ করা হবে। পরে ২১ থেকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে বিডিও, এসডিও অফিসের মাধ্যমে ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই তালিকা অনুযায়ী আবাসের টাকা দেওয়া হবে। ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলাস্তরের কমিটি তালিকার অনুমোদন দেওয়ার পর এই টাকা দেওয়া শুরু হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাংলার প্রায় ৮২০০ কোটি টাকা দু বছরে বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগে জানিয়েছিলেন যে কেন্দ্র টাকা না দিলে রাজ্যের কোষাগার থেকেই টাকা দেওয়া হবে। সেই মতো পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। আর এই প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলার আবাস যোজনা’। যদিও পরে নাম বদল করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।