ভারতের নিরাপত্তা কখনও বিঘ্নিত হতে দেবে না মালদ্বীপ। ভারতে এসে এমনটাই মন্তব্য করলেন দেশেটির প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত ইস্যুতে কূটনীতিক ইউটার্ন নিয়েছে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।
মুইজ্জু চীনের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ভারতের উদ্বেগ বেড়েছিল। চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও বৃদ্ধি পেয়েছে মালদ্বীপের। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার দ্বিপাক্ষিক সফরে ভারতে এসে মুইজ্জু দাবি করলেন, তাঁর সরকার ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে দেবে না।
রোববার ভারতে সফরে আসেন মুইজ্জু। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে একদফা বৈঠকও করেছেন তিনি। সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করবেন মুইজ্জু। তার আগে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ভারত মালদ্বীপের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্য অনেক দেশের সঙ্গে মালদ্বীপের যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু আমাদের কোনো কাজে যাতে ভারতের নিরাপত্তার ক্ষতি না হয়, আমরা সে দিকটিও বরাবর মাথায় রেখে চলি।’
ক্ষমতায় আসার পরেই ভারতের সেনাবাহিনীকে মালদ্বীপ থেকে সরে যেতে বলেছিলেন মুইজ্জু। তাঁর কথা অনুযায়ী ভারতকে সেনা সরিয়েও নিতে হয় দ্বীপরাষ্ট্র থেকে। সে প্রসঙ্গে মুইজ্জু বলেন, ‘ভারত এবং মালদ্বীপ একে অপরের চাহিদা এবং অগ্রাধিকারগুলোর বিষয়ে পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে এগিয়ে চলে। এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। মালদ্বীপের মানুষ আমাকে যা করতে বলেছিলেন, আমি তাই করেছি।’ মালদ্বীপ থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার কোনও প্রভাব ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে পড়েনি বলেও দাবি করেছেন মুইজ্জু।
বর্তমানে অর্থনৈতিক সঙ্কটের দিকে এগোচ্ছে মালদ্বীপ। মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পরেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেননি। তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন মালদ্বীপে ভারত-বিরোধী প্রচারের মাধ্যমেই। এরপর মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের সময়ে তাঁর সরকারের তিন মন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। যার ফলে ভারতে মালদ্বীপ সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। মালদ্বীপে প্রতি বছর বহু ভারতীয় পর্যটক ঘুরতে যান। দেশটির অর্থনীতির অন্যতম ভিত পর্যটন। কিন্তু ভারত থেকে বয়কটের ডাক ওঠায় মালদ্বীপ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। পরে সে দেশের মন্ত্রীরা ক্ষমা চান। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। ক্ষমতায় আসার পরেই চীন সফরে গিয়েছিলেন মুইজ্জু। কিন্তু ভারতে আসেননি।