আরজি কর প্রসঙ্গ উঠল, তবে নির্যাতিতার পরিবার ও শাহের সাক্ষাৎ হল না, দূরত্ব রক্ষা কি হিসেব কষেই

জল্পনাই সার, সাক্ষাৎ হল না। আরজি করে নির্যাতিতার মা-বাবা অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছিলেন দেখা করতে চেয়ে। শাহের কলকাতা সফরে সেই সাক্ষাৎ হবে বলে কোনও কোনও মহল থেকে বলাও হচ্ছিল। কিন্তু তা হল না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষে এমনটা জানানো হয়নি যে শনি ও রবিবার অমিত শাহ কলকাতায় থাকার সময়ে তাঁর সঙ্গে আরজি করে নির্যাতিতা চিকিৎসকের পরিবারের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন দাবি নির্যাতিতার পরিবারের তরফেও করা হয়নি। রাজ্য বিজেপিও সাংগঠনিক ভাবে এমন সম্ভাবনার কথা জানায়নি। দলের পক্ষে কিছু বলা না হলেও বিজেপির কয়েক জন নেতা এমন একটা বৈঠকের জল্পনা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু জল্পনা বাস্তব হল না। তবে আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে রবিবারই প্রথম কোনও মন্তব্য করলেন শাহ। দলীয় সভায় সন্দেশখালির সঙ্গে আরজি কর কাণ্ডের তুলনা টেনে দাবি করলেন, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত এমন চলতেই থাকবে।

বেশি রাতে কলকাতায় আসেন শাহ। রাত্রিবাস করেন নিউটাউনের একটি হোটেলে। রবিবার সকালে তিনি চলে যান বনগাঁয় সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে। সেখান থেকে নিউ টাউনের হোটেলে ফিরে কিছু ক্ষণের মধ্যেই চলে যান সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে। সেখানে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের আনুষ্ঠানিক সূচনা অনুষ্ঠানে ছিলেন শাহ। সেই কর্মসূচি শেষ হতেই সোজা বিমানবন্দরে গিয়ে দিল্লি উড়ে যান। এর মধ্যেই কোনও একটা সময়ে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে বলে মনে করা হলেও তা হয়নি। এ নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এমন সম্ভাবনার কথা তো আমারও জানা ছিল না।’’

সুকান্ত এমনটা বললেও বিজেপি নেতা তথা কলকাতার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ দাবি করেছিলেন বৈঠক হবে। রবিবার সকালে সজলকে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে ফোন করে সাক্ষাতের সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়েই তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ এর পরে বিকেলে শাহ দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার সময়ে সজল ফোনে বলেন, ‘‘আমার কাছে এখনও খবর নেই। তবে শুনছি বিকেলেই সাক্ষাৎ হবে।’’ আর শাহ দিল্লির উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার পরে তিনি বলেন, ‘‘শাহ জানিয়েছেন এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে কথা হবে না। সে কারণেই এখানে সাক্ষাৎ চাননি। উনি সম্ভবত পরে দিল্লিতে ডেকে নেবেন।’’ যদিও শাহের সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের সাক্ষাতের বিষয়ে এমন সম্ভাবনার কথা বিজেপির রাজ্য স্তরের কোনও নেতা জানাননি।

শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের জল্পনার জন্ম হয় নির্যাতিতার বাবার তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠানো একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে। নির্যাতিতার বাবা-মা শাহের সঙ্গে দেখা করতে চান বলে গত মঙ্গলবার দাবি করেছিলেন বিজেপি নেতা সজল।

নির্যাতিতার বাবা শাহকে ইমেল পাঠিয়েছেন জানিয়ে সজল একটি চিঠিও প্রকাশ্যে আনেন। গত বুধবারই কলকাতায় আসার কথা ছিল শাহের। ঠিক তার আগের দিন শাহকে লেখা চিঠির কথা জানিয়ে সজল বলেন, মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর থেকেই প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন দম্পতি। অসহায় বোধ করেছেন উভয়েই। এমন অবস্থায় তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কিছু বিষয়ে আলোচনা করতে চান নির্যাতিতার বাবা-মা। আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শাহ কী ভাবছেন, তা-ও জানতে চান তাঁরা। সাক্ষাতের জন্য শাহের থেকে সময় চেয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার ছিল শাহের জন্মদিন। নির্যাতিতার বাবা ইমেলে শাহকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।